হাফিজুর রহমান, তালতলী (প্রতিনিধি) বরগুনা: লগডাউনের কারনে বিক্রি না করতে না পারায় বরগুনা তালতলীর সওদাগর পাড়া গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শাক সবজি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ক্ষেতেই নষ্ট হতে চলেছে স্বপ্নের ফসল উপযুক্ত ক্রেতার অভাবে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে বরগুনার তালতলীর সওদাগর পাড়া গ্রাম এখন সবজিতে বিখ্যাত শত শত হেক্টর জমি এখন সবজি চাষের জন্য উপযোগী করে সবজি ফলাচ্ছে চাষিরা লবণাক্ত এই জমিতে অনেক কষ্ট করে কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে দল গঠন করে সবজি চাষ করতে উৎসাহী হচ্ছেন চাষিরা এ বছরের শুরুতেই বৃষ্টি না থাকায় বেগ পেতে হয়েছে চাষীদের চারদিকে সবুজের সমাহার।
কিন্তু চাষীদের চোখের কান্না যেন সন্তানহারা বাবার কান্না চেয়ে কম নয় হাজার হাজার টাকা খরচ করে অক্লান্ত পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদ বৃষ্টির মধ্যেও মাঠে ঘাটে ফসল ফলাতে মরিয়া চাষীরা। চাষী যখন ক্ষেতের দিকে তাকায় ফল দেখে তার প্রাণ জুড়ায় কিন্তু যখন বিক্রি করতে যায় ফসল খালে ফেলে দিয়ে খালি জুলি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।
সরজমিনে গিয়ে কথা হয় এই এলাকার প্রথম চাষি যার হাত ধরে একে একে এই গ্রাম সবজি চাষে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে সেই সচেতন চাষী শাহাদাত মাতুব্বরের সাথে জিনি এই উপজেলার সবজী চাষে এক অন্যরকম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। চাল কুমড়া মিষ্টি কুমড়া করলা শসা হাইব্রিড মরিচ বরবটি ও বেগুন থেকে শুরু করে অনেক ধরনের শাক চাষ করেন।
শাহাদাত মাতুব্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন জানিনা আমাদের সবজি চাষিদের কপালে কি আছে গতকাল এক গাড়ি সবজি পাঠাইছিলাম পটুয়াখালী, একটি টলার সবজি নিয়ে গেছে বরগুনা, আজ সকালে পটুয়াখালী আড়তে ফোন দিলাম জিজ্ঞেস করলাম দর দাম কেমন বলে ভাই বাজারে লক ডাউনের কারনে কোন লোক জন নাই, কোন পাইকার পত্র নাই দাম দিয়ে কি করবেন বিক্রি করবো কাদের কাছে সেই লোক ই তো দেখি না এরপর ফোন দিলাম বরগুনা টলারের খবর নিলাম জিজ্ঞেস করলাম সেখানে বাজারের কি পরিস্থিতি একি কথা বেচা কেনা নাই শসা ৫টাকা ৬টাকা কেজি জানিনা কি আছে কৃষকদের কপালে।
তিনি বলেন আমি ৬০শতক জমিতে শসা করলা মরিচ চাষ করেছি ফলন খুব ভালো হয়েছে আমাদের সবজি বরিশাল পটুয়াখালী বরগুনা গলাচিপা সহ আরো ছোটখাট বাজারে বিক্রি হয় এরকম চলতে থাকলে আমাদের ভিটা বাড়ি বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করতে হবে আর চাষীদের ও চাষাবাদে অনীহা চলে আসবে চাষি ইসমাইল বলেন আমাদের নিজেদের জমি নেই আমরা এই জমি বর্গা রেখে চাষাবাদ করি সার ঔসুধ বাকিতে কিনতে হয় ফল আসছে পাওনাদাররা টাকার জন্য তাগিদ দিচ্ছে আমাদের এখন সব ফেলে পালিয়ে জাওয়া ছারা উপায় নেই সার কিটনাসোক ব্যাবসাইদের কাছে জানতে চায়লে তারা বলেন আমরা বিভিন্ন এনজিও দিয়ে লোন করে ব্যাবসা চালাই এপ্রিল মাস থেকে কৃষকদের বাকিতে মাল দেই ফসল এলে টাকা পাবো এবছর লগডাউনে যা সুনছি ফসলের দাম নেই বিক্রিও করতে পারছেনা কিছু চাষি পালিয়ে জাবে আমাদের কি পালা হয় জানিনা করনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্টি পরিস্থিতিতে এখন আমাদের মাথায় হাত এমতাবস্থায় সরকারের কাছে আমাদের আবেদন আমাদের বাঁচার জন্য সহযোগিতা করুন।
একই এলাকার আরো অনেক চাষিদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম জমি বন্ধক রেখে কর্জ করে বাকিতে এনে ফসল ফলান এমতা অবস্থায় আরো কিছুদিন এভাবে লকডাউন থাকলে তাদের পথে বসা ছাড়া আর উপায় হবে না তারা একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ।
এদিকে কাঁচামাল ব্যাবসাইরা বলছেন কৃষক সবজি নিয়ে আসলেইত হবেনা আমাদের বিক্রিও তো করতে হবে লগডাউনে মানুষ বেরহতে পারছেনা কাঁচা মাল মজুতও করা যায়না পাইকার আসেনা আজকে অনেক সবজি খালে ফেলে দিয়েছি তালতলী কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, লকডাউন এর কারণে ক্রেতা কম ও কৃষিপণ্য মজুদ করে রাখা যায় না। যার কারণে কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। লকডাউন শেষ হলেই আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।